বর্তমান রাজবাড়ি দিনাজপুর শহরের উত্তর-পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত ধ্বসপ্রাপ্ত নিদর্শন মাত্র। আদিতে প্রতিরক্ষা পরিখা ও উঁচু প্রাচীর বেষ্টিত দিনাজপু...

এক নজরে দিনাজপুর রাজবাড়ী - বাংলাদেশ

বর্তমান রাজবাড়ি দিনাজপুর শহরের উত্তর-পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত ধ্বসপ্রাপ্ত নিদর্শন মাত্র। আদিতে প্রতিরক্ষা পরিখা ও উঁচু প্রাচীর বেষ্টিত দিনাজপুর রাজবাড়ির বর্তমান পরিত্যক্ত ধ্বংসস্তূপে প্রবেশের জন্য পশ্চিম দিকে একটি উঁচু খিলানপথ রয়েছে। প্রবেশপথের বাম দিকে মূল প্রাসাদ এলাকার মধ্যে খোলা জায়গায় রয়েছে একটি কৃষ্ন মন্দির। ডান দিকে রয়েছে প্রাসাদের বহির্বাটির কিছু ধ্বংসাবশেষ ও অপর একটি প্রবেশপথ যা একটি বর্গাকার চত্বরে উন্মুক্ত হয়েছে।
এটিও পড়ুন -ইংলিশ শেখার দুর্দান্ত বই - ডাইনামিক মেমরি ( ২৫% ছার )

বর্গাকার চত্বরটির পূর্ব পার্শ্বে রয়োছে চত্বরমুখী সমতল ছাদবিশিষ্ট একটি মন্দির।চারটি সেমি-কোরিনথিয়ান স্তম্ভের উপর মন্দিরের সামনের বারান্দা এবং অপর এক সেল কলামের উপর মূল হল ঘরটির ছাদ ন্যস্ত।
এক নজরে দিনাজপুর রাজবাড়ী


দারুনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ও ধ্বংসপ্রাপ্ত প্রাসাদটি এখন শুধুই পরিত্যক্ত ইটের সমাহার।ভবনগুলি ভেঙ্গে খন্ড খন্ড হয়ে যাওয়ার শেষ পর্যায়ে উপনীত। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রাজা ও জমিদার রাজবাড়ির বিভিন্ন অংশ নির্মাণ করলেও মূল প্রাসাদ ভবনটি তিনটি প্রধান মহলে বিন্যস্ত।এগুলি আয়না মহল, রানী মহল ও ঠাকুরবাড়ী মহল হিসেবে পরিচিত।প্রাসাদ এলাকায় বেশ কয়েকটি মন্দি,বেস্ট হাউস, দাতব্য চিকৎসালয়,দিঘি এবং বিভিন্ন কর্মচারী ও পোষ্যদের আবাসস্থল নির্মণ করা হয়েছিল।

এ সকল দালান-কোঠা এবং পূর্ব ও দক্ষিণের দুটি বৃহৎ দিঘি,পরিখা,বাগান,একটি বিলুপ্ত চিরিয়াখানা,একটি টেনিস কোর্ট,কাচারি ও কুমার হাউস-সহ রাজবাড়িটি প্রায় ১৬.৪১ একর নিয়ে বিস্তৃত।মূল মহলও এর সংলগ্ন পরিখা সম্ভবত অষ্টাদশ শতাব্দীতে মহারাজা প্রাণনাথ ও তার পোষ্যপুত্র রামনাথ নির্মাণ করেছিলেন।প্রাসাদটি নির্মিত হয়েছিল ইউরোপীয়, মুসলিম ও হিন্দু রীতির এক অদ্ভুত সংমিশ্রণে, যা খুব একটা দৃষ্টিনন্দন হয় নি।রামডাঙ্গা নামক দুটি সমান্তরাল পরিখা প্রাসাদটি ঘিরে ছিল।পরিখাটি সম্ভবত আলীবর্দী খান এর শাসনামলে রংপুরের ফৌজদার সৈয়দ আহমেদ খানের আক্রমণের পরই রামনাথ খনন করিয়েছিলেন।

আয়না মহল নামে পরিচিত পূর্বমূখী দ্বিতল মূল প্রাসাদটির অধিকাংশই এখন ধসে পড়েছে। এ ধ্বংসাবশেষে অথবা টিকে থাকা সামান্য কিছু নিদর্শনের মাঝে বা চুর্ণ-বিচুর্ণ পাথরের কোথাও এর পূর্বের কাচের মোজাইক চোখে পড়ে না।পূর্বেদিকের ৪৫.৭২ মিটার প্রশস্ত একটি অভিক্ষিপ্ত বারান্দা রয়েছে। ব্যালকনির উভয় পার্শ্বে দুটি প্রশস্ত প্যাঁচানো সিড়ি দোতালায় উঠে গেছে।সম্মুখভাগে অভিক্ক্ষপ্ত বারান্দাটির নিচে রয়েছে গ্রিক আয়োনিক রীতির স্তম্ভের সারি। জোড়ায় জোড়ায় স্থাপিত স্তম্ভেগুলিতে আবার রয়েছে গোলাকৃতির ব্যান্ড। একটি মাত্র আয়তার প্যানেল ব্যতীত উপরের প্যারাপেটটি সমতল।প্যারাপেট থেকে সামান্য উচু আয়তাকার প্যারাপেটিতে রয়েছে রাজকীয় চিহ্নের মাঝে রিলিফ করা মুখোমুখি দুটি হাতি ও মুকুট-এর নকশা।মহলটির মেঝে সাদা-কালো মার্বেল পাথর দ্বারা এবং ছাদ, বিশেষ করে দরবার হল,জলসা হল,তোষাখানা ও পাঠাগার, স্টাকো পদ্ধতিতে চকচকে করা হয়েছে। পশ্চিমের মূল প্রাসাদ ব্লকের পেছোনে রয়েছে রানী মহল ও ঠাকুরবাড়ি মহলের দ্বিতল বর্গাকার ব্লক। একদা এ সমস্ত অসাধারন সুন্দর নিদর্শনের রিলিফ,খোদিত নকশা ও সমস্ত মূল্যবান বস্তই বর্তমানে খুলে নেওয়া হয়েছে।
উৎস-https://dinajpur.net

পশ্চিম দিনাজপুর এর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস ১ম দফা বিভাজনটি সংঘটিত হয় ১৯৪৭ সালে বঙ্গভঙ্গের সময়- বাংলাদেশ (তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তান) ও ভারতের মধ্যে...

পশ্চিম দিনাজপুর এর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

পশ্চিম দিনাজপুর এর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

১ম দফা বিভাজনটি সংঘটিত হয় ১৯৪৭ সালে বঙ্গভঙ্গের সময়- বাংলাদেশ (তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তান) ও ভারতের মধ্যে এবং দিনাজপুরের কেন্দ্র তথা মূল অঞ্চলটি বাংলাদেশে পড়ে। ভারতের অংশটি (পশ্চিম দিনাজপুর) । এটি পশ্চিম বঙ্গের একটি জেলা (ভারত)। এটি ১লা এপ্রিল ১৯৯২ সালে পশ্চিম দিনাজপুর (১৯৪৭-১৯৯২) ভেঙ্গে দুই ভাবে বিভক্ত হয়। একটির নাম হল-১) দক্ষিন দিনাজপুর  ও অন্যটি ২) উত্তর দিনাজপুর ।

দিনাজপুরের নামকরণ   ধারণা করা হয় প্রতাপশালী ব্যক্তি দানূজ রায়ের নাম হতে দিনাজপুর নামটি এসেছে। অন্যদিকে কারো মতে পঞ্চদশ শতকের প্রথমার্ধে উ...

কি করে হল দিনাজপুর নামটি

দিনাজপুরের নামকরণ 

 ধারণা করা হয় প্রতাপশালী ব্যক্তি দানূজ রায়ের নাম হতে দিনাজপুর নামটি এসেছে। অন্যদিকে কারো মতে পঞ্চদশ শতকের প্রথমার্ধে উত্তর বাংলার রাজা গণেশ যখন গৌড়ের সিংহাসনে আরোহন করেন তখন "দনুজ মর্দন দেব" বা"দানূজ মর্দন দেব" উপাধি ধারন করেন। পরবর্তীতে এই উপাধি থেকে দিনাজপুর নাম হয়।একদিন দিনাজপুরে ছিল রাজবাড়ী। যেহেতু রাজবাড়ী যে মৌজায় অবস্থিত তার নাম দিনাজপুর তাই রাজার সন্মানার্থে এই জেলার ও শাসনাধিকরণ শহরটির নাম হয় দিনাজপুর।

দিনাজপুরের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস  বাংলাদেশে ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর রাজ্যারম্ভের সূচনায় সৃষ্ট আদি জেলা শহরগুলির অন্যতম পুরাতন শহর ছিল দিনাজপুর।...

দিনাজপুরের জন্ম ইতিহাস

দিনাজপুরের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস


 বাংলাদেশে ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর রাজ্যারম্ভের সূচনায় সৃষ্ট আদি জেলা শহরগুলির অন্যতম পুরাতন শহর ছিল দিনাজপুর। বর্তমান দিনাজপুর জেলা পূর্বের সেই দিনাজপুরের সামান্য এক খন্ড মাত্র। আদি সেই দিনাজপুরের বৃহৎ একটি অংশ পড়েছে ভারতে।১৭৮৬ সালে শাসনাধিকরণ বা জেলা শহর স্থাপিত হয় দিনাজপুর নামক মৌজায়।দিনাজপুরে স্থায়ী শাসনাধিকরণ স্থাপিত হওয়ার প্রায় শতাধিক বছর পরে প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে গঠিত হয় দিনাজপুর পৌরসভা (১৮৬৯)বর্তমান দিনাজপুর জেলা অস্তিত্বে আসে পুরাতন সেই দিনাজপুরের দুইদফা বিভাজনের মাধ্যমে। ১ম দফা বিভাজনটি সংঘটিত হয় ১৯৪৭ সালে বঙ্গভঙ্গের সময়- বাংলাদেশ (তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তান) ও ভারতের মধ্যে এবং দিনাজপুরের কেন্দ্র তথা মূল অঞ্চলটি বাংলাদেশে পড়ে। ভারতের অংশটি (পশ্চিম দিনাজপুর) আবার ভেঙ্গে উত্তর দিনাজপুর ও দক্ষিণ দিনাজপুরগঠিত হয়। আর বাংলাদেশের অংশটি (বৃহত্তর দিনাজপুর জেলা) ১৯৮৪ সালে ভেঙ্গে দিনাজপুর (বর্তমান), ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড় জেলা গঠন করা হয় এবং বৃহত্তর দিনাজপুরের কিয়াদাংশ রংপুর ও নীলফামারী জেলার অন্তর্গত হয়।

Advertisement