পূর্ব পশ্চিম উত্তর দক্ষিণ ভারতের বর্ণনা
পূর্ব ভারত
পূর্ব ভারত (ইংরেজি: East India) ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশা রাজ্যের সমন্বয়ে গঠিত অঞ্চল। ভৌগলিকভাবে এটি উত্তর ভারত ও উত্তর-পূর্ব ভারত অঞ্চল দুইটির মাঝে অবস্থিত এবং স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশের সাথে ভাষাগত ও সংস্কৃতিগতভাবে সম্পর্কিত।
এই অঞ্চলে কথিত ইন্দো-আর্য ভাষাগুলি প্রাচীন মগধ রাজ্যের মাগধী প্রাকৃত ভাষা থেকে উদ্ভূত; এদের মধ্যে মাগধী ভাষা ও ওড়িয়া ভাষা সবচেয়ে সরাসরি মাগধী প্রাকৃত থেকে উদ্ভূত বলে মনে করা হয়।দুর্গা ও জগন্নাথ এই অঞ্চলের জনপ্রিয় দেবদেবী। পুরি হিন্দুধর্মের একটি পূর্বাঞ্চলীয় তীর্থকেন্দ্র। ভুবনেশ্বর মন্দিরের শহর হিসেবে খ্যাত।
পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতা অঞ্চলটির বৃহত্তম মেট্রোপলিটান শহর। তবে ঐতিহাসিকভাবে ওড়িশার ভুবনেশ্বর, কটক ও পুরি এবং বিহারের রাজধানী পাটনা গুরুত্ববাহী।
উত্তর-পূর্ব ভারত
উত্তর-পূর্ব ভারত বলতে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিক্কিম, আসাম, অরুণাচল প্রদেশ, মেঘালয়, মণিপুর, নাগাল্যান্ড, মিজোরাম ও ত্রিপুরা রাজ্যসংলগ্ন অঞ্চলটিকে বোঝায় ।
দক্ষিণ ভারত
দক্ষিণ ভারত ভারতের তামিল নাড়ু, অন্ধ্র প্রদেশ, কর্ণাটক ও কেরল অঙ্গরাজ্য এবং লাক্ষাদ্বীপ ও পণ্ডিচেরি প্রশাসনিক এলাকাগুলি নিয়ে গঠিত অঞ্চলের সাধারণ নাম। দক্ষিণ ভারত ভৌগলিকভাবে উপদ্বীপীয় দাক্ষিণাত্যের মালভূমি অঞ্চলে অবস্থিত। এর পশ্চিমে আরব সাগর, দক্ষিণে ভারত মহাসাগর এবং পশ্চিমে বঙ্গোপসাগর।
অঞ্চলটির ভূগোল বৈচিত্র্যময়। এখানে দুইটি পর্বতমালা পূর্ব ঘাট ও পশ্চিম ঘাট এবং এদের মধ্যবর্তী এলাকায় একটি মালভূমি অবস্থিত। তুঙ্গভদ্র নদী ও কাবেরী নদী এখানকার পানির প্রধানতম দুই উৎস। দক্ষিণ ভারতের অধিবাসীদেরকে "দক্ষিণ ভারতীয়" বলা হয়। এদের অধিকাংশই তামিল ভাষা, তেলুগু ভাষা, কন্নড় ভাষা এবং মালয়ালম ভাষা—এই চারটি দ্রাবিড় ভাষার একটিতে কথা বলেন। ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রাজা অঞ্চলটি শাসন করেছেন; এদের কারও কারও রাজ্য ও প্রভাব দক্ষিণ ভারতের সীমানা ছাড়িয়ে সমগ্র দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতে ছড়িয়ে পড়েছিল। আধুনিক জাতিরাষ্ট্র শ্রীলংকা, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড এবং মালয়েশিয়া-তেও দক্ষিণ ভারতের প্রভাব দেখতে পাওয়া যায়। ব্রিটিশেরা ধীরে ধীরে অঞ্চলটি ঔপনিবেশিক শাসনের আওতায় আনে।
ভারতের স্বাধীনতা লাভের অব্যবহিত পরের দশকগুলির অস্থিতিশীলতা কাটিয়ে বিগত তিন দশক ধরে দক্ষিণ ভারতের অঙ্গরাজ্যগুলি জাতীয় গড়ের চেয়ে বেশি হারে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। আর্থ-সামাজিক কিছু কিছু ক্ষেত্রে উন্নতি লাভ করলেও[১][২] ভারতের বাকী অংশের মত এখানেও অর্থনৈতিক অসমতা, নিরক্ষরতা এবং দারিদ্র্য বড় সমস্যা। কৃষিকাজ এখানকার প্রধান অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড হলেও সম্প্রতি তথ্যপ্রযুক্তি খাত ব্যাপক উন্নতি লাভ করেছে। এখানকার শিক্ষা ব্যবস্থা এবং স্থাপত্য প্রায় দুই হাজার বছরের বিবর্তনের ফসল এবং এগুলি ভারতের অন্যান্য অঞ্চল অপেক্ষা ভিন্ন। এখানকার রাজনীতিতে জাতীয় দলগুলির চাইতে প্রাদেশিক ছোট দলগুলির প্রাধান্য বেশি।
প্রজনন হার এবং অবকাঠামোগত সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিবেচনা করলে দক্ষিণ ভারত ভারতের শীর্ষস্থানীয় অঞ্চল; এখানকার প্রজনন হার ১.৯, যা ভারতের সব অঞ্চলের মধ্যে সর্বনিম্ন[৩]।পশ্চিম ভারত
পশ্চিম ভারত ভারতের পশ্চিমের গোয়া, গুজরাট ও মহারাষ্ট্র অঙ্গরাজ্য, দমন ও দিউ এবং দাদরা ও নগর হাভেলি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলি নিয়ে গঠিত। ভারতের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় পশ্চিম ভারত অপেক্ষাকৃত বেশি শিল্পায়িত এবং এখানে নগরে বাসরত জনসংখ্যার পরিমাণও বেশি। [১] ব্রিটিশদের ঔপনিবেশিক শাসনের আগে পশ্চিম ভারতের বেশির ভাগ অংশ মারাঠা সাম্রাজ্য ও মুঘল সাম্রাজ্যের অংশ ছিল। ভারতের স্বাধীনতা লাভের এগুলি ভারতের অংশে পরিণত হয় এবং ১৯৫৬ সালের রাজ্য পুনর্গঠন আইন অনুসারে বর্তমান রূপ পরিগ্রহ করে। [২] পশ্চিম ভারতের রাজ্যগুলি উত্তর-পশ্চিমে থর মরুভূমি, উত্তরে বিন্ধ্য পর্বতমালা, এবং পশ্চিমে আরব সাগর দ্বারা বেষ্টিত। পশ্চিম ভারতের একটি বড় অংশ দক্ষিণ ভারতের সাথে দাক্ষিণাত্যের মালভূমির অংশীদার।তথ্যসংগ্রহ-http://bn.wikipedia.org
0 comments